Saturday, June 3, 2017

অশান্ত পাহাড়

ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে পাহাড়িরা। আর পিছনে পুড়ছে ঘর-বাড়ি

















পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি এলাকা, যা তিনটি জেলা, রাঙামাটিখাগড়াছড়ি, ও বান্দরবান নিয়ে গঠিত।  এটি মুলত পাহাড়ী অঞ্চল। এই অঞ্চলে মুল আদিবাসী হচ্ছে চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, খিয়াং সহ আরো অনেক ছোট ছোট জন গোষ্ঠি। এরা জাতে মঙ্গলীয় শ্রেনীর। এদের প্রধান জীবিকা হচ্ছে জুম চাষ। সেই পাশাপাশি কৃষি কাজ ও বাগান বাগিছা করা থেকে সব কিছু করছে তারা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়। তখন সেই পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষদের মাঝে একটি শান্তি বিরাজ করেছিল। কিন্তু যখন ১৯৭২ সালে বর্তমান সরকারের প্রধান আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যখন পাহাড়ীদের বাঙালি হতে আহ্বান জানান। তখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে একটি অশান্তি বার্তা বয়ে আনে। তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদে যোগ দেন। সাবেক এবং প্রয়াত স্বাধীন চেতনার বীজ শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ন লারম (লারমা)। এর ঘোর বিরোধিতা করে সংসদ ওয়াক আউট করেন। সেই সময় মানবেন্দ্র নারায়ন লারমাকে হুশিয়ারি করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পাহাড়ে হাজার হাজার বাঙালি ডুকিয়ে দিয়ে আপনাদের বাঙালি করা হবে। তখন থেকে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা সশস্ত্র সংগ্রামের প্রয়োজন মনে করে গেরিলা বাহিনী শান্তিবাহিনী নামে একটি সশস্ত্র গ্রুপ করেন। তখন থেকে শান্তি বাহিনী আবির্ভাব হয়। তখন থেকে সশন্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়। 


পুড়ে যাওয়ার পর সহায় সম্বল নিয়ে পরিবারের সদস্য
সেই সশস্ত্র সংগ্রামের ভিতরেও বিএনপির প্রধান জিয়াউর রহমান ও স্বৈরশাসক হুইসেন মহাম্মদ এরশাদের আমলে হাজার হাজার বাঙালিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেটেল করা হয়। তখন কার সময়ে ১৯৮৬ সাল চলছিল। এর ভিতরে পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েকটি গন হত্যা সংঘটিত হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সেটেলার বাঙালিদের মাধ্যমে প্রথম সংঘটিত হয় কাউখালী উপজেলার সদরে । সেই গনহত্যায় প্রায় ৮০০-১০০০ লোককে হত্যা করা হয়। সেই পর নানিয়াচরের গনহত্যা সেখানেও প্রায় হাজার খানিক মৃত্য বরন করে, এরপর লুংগদুসহ মারিশ্যা লোগাং সহ আরো কয়েকটি বড় বড় গনহত্যা করা হয়।  এরপর ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেটা বর্তমান সরকারের আমলে হয়েছিল। সেই চুক্তি হওয়ার পর পাহাড়ে বসবাস করা পাহাড়ী ও বাঙালিদের মনে একটি প্রশান্তি বার্তা বয়ে আনবে বলে মনে করা হয়েছিল।



 কিন্তু সেই চুক্তির পর প্রতি বছর হাজার হাজার  পার ভাঙা ও নদী ভাঙা বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামে সেটেল করা হচ্ছে। তাদের কারনে আজ পাহাড়ে অশান্তির বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছে। এর পাশাপাশি ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু যে ঘোষানা দিয়েছিল। তার প্রতিফলন ঘঠাতে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, বাংলাদেশ আর্মট পুলিশ, বাংলাদেশ বিজিবি সহ আরো অনেক সংঘটন। আজ পাহাড়ে বাঙালি আর পাহাড়ি সমান।


এর পর প্রতিবছর নানা জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলা করা হয়। সেই সাথে  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় বাঙালিরা পাহাড়ীদের ঘর বাড়ি লুটপাঠ করে তারপর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে দেয়া হয়। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেই। যা দেখে মনে হয় আমরা এখনো ১৯৭১ সালে আছি। এ যেন এক ১৯৭১ সাল। ]





পুড়ে যাওয়া ঘর (সুত্র- ফেসবুক থেকে)


হাজার হাজার পাহাড়ী ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এ যেন এক ১৯৭১ সাল
৩/০৬/২০১৭ইং রোজ শুক্রবার জুমার নামাযের দিন লুংগদুতে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়। শুধু তাই নই ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে জ্বলন্ত আগুনে দিয়ে মেরে ফেলা হয়। ঘটনার সুত্র পাঠ খাগড়াছড়ি জেলাধীন দিঘীনালা উপজেলাস্থ চার মাইল নামক এক যুবলীগ কর্মীর লাশ পাওয়া যায়। সেই যুবলীগ কর্মীর নাম নয়ন ইসলাম( যুবলীগ কর্মীর সম্পাদক) তাকে কে বা কারা হত্যা করেছে। তার কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া শুধু অনুমানের ভিত্তিতে পাহাড়ীদের  দোষারোপ করা হয়। সেই সুত্র ধরে লুংগদু উপজেলায় গ্রামের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
পাহাড়ে যখন কোন বাঙালির লাশ পাওয়া যায়। তখন সন্দেহ তীর কিন্তু পাহাড়ীদের দিকে তাক করা হয়। সেখানে কোন তদন্ত হয় না। কোন কিছুর আলামত ছাড়া একতরফা ভাবে পাহাড়ীদের দোষারোপ করা হয়। 
 এই ধরনেরর ঘটনা অহর অহর ঘটছে। যা বাহিরে প্রকাশ হচ্ছে না। শুধু তারা সাম্প্রদায়িক উস্কে দিচ্ছে না। প্রতিদিন ঘটছে হত্যা, ধর্ষন,. লুটপাট সহ আরো অনেক কিছু। এর মুলে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
অথচ এখন ধর্মপ্রান মুসলমানদের  রোজার মাস ও শ্যাম সাধনার মাস। শুধু তাই নই শুক্রবার জুমার নামাযের  দিন এই দিনে ধর্মপ্রান মুসল্লিরা মসজিদে গিয়ে নামাষ আদায় করে নিজের আত্মশুদ্ধির জন্য। কিন্তু তারপরেও  এই ধরনের ঘটছে। তখন প্রশ্ন জাগে আসলে কি ইসলাম মানে কি শান্তি।



রোহিঙ্গাদের জন্য আপনাদের  মানবিক থাকে। কিন্তু নিজ দেশের পাহাড়ীদের কোন মানবিক নেই। শুধু আপনাদের মুসলমান বলে মানবিক থাকবে। নাকি ননমুসলিমদের হত্যা করার জায়েজ আছে।

পাহাড়িরা কোন দিন বিচার চাইবে না। কারন, বিচার কোনদিন হবে। এই দেশ পাহাড়ীদের নই। এই দেশ ধর্মপ্রন মুসলমানদের।

No comments:

Post a Comment

দার্জিলিং ঘুরে আসা নতুন অভিজ্ঞতা

কয়েক দিন যাবৎ মন মানসিকতা তেমন কোন ভাল ছিল না। আর সেই ফাকে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। এই রকম চিন্তা করতে করতে। হঠাৎ আমার ফোন বেজে উঠল। দেখি আ...