Tuesday, November 6, 2018

দার্জিলিং ঘুরে আসা নতুন অভিজ্ঞতা


কয়েক দিন যাবৎ মন মানসিকতা তেমন কোন ভাল ছিল না। আর সেই ফাকে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। এই রকম চিন্তা করতে করতে। হঠাৎ আমার ফোন বেজে উঠল। দেখি আমার এক সিনিয়র ভাইয়ের ফোন। রিচিভ করে হ্যালো বললাম। তারপর তিনি এমন একটা অফার করল। যা ভাবতে পারে নি। অফারটা ছিল দার্জিলিংয়ে একটা আমাদের ধর্মীয় প্রগ্রাম আছে। সেখানে আমাদেরকে নিমন্ত্রন করা হয়েছে।

টয় ট্রেন স্টেশন
আমরা এমনি একটি শখ ছিল দার্জিলিং শুধু নাম শুনেছি। কিন্তু স্বচোক্ষে দেখার সুযোগ হয় নি। আমি সাত পাঁচ না ভেবে সোজা রাজি হয়ে গেলাম। তারপরের দিন আমাদেরকে যেতে হবে। তাই আমার বন্ধু আমাকে সব কিছু প্রস্তুত করে থাকতে বলেছিলেন। বলল যে- ওখানে প্রচুর ঠান্ডা গরম কাপড় নিলে ভালো হবে। যেহেতু শীত আসতে অনেক দেরি তাই গরম কাপড় এখনো কেনা হয় নি। তারপরও যা আছে তাই নিয়ে নিলাম।


কাঙ্খিত দিন আসল। আমাদের জন্য একটা সাদা টাটা ইনো ভাড়া করা হল। আমরা সর্বমোট পাঁচ জন ছিলাম। আমরা রেডি হয়ে বের হলাম। তারপর আমাদের গাড়ি চলতে থাকল। এরপর শুরু হলো পাহাড় উঠা পাহাড়ে বাঁকগুলো এমন বাঁক ড্রাইবার যদি কোন কারনে ব্রেক ফেল করে তাহলে আমাদের খুজে পাওয়া মুশকিল হবে।

দার্জিলিং উঠার সময় বাঁকের পর বাঁক আর খাড়া পাহাড়
আর সেই পাশাপাশি উত্তেজনা ছিল। কারন, প্রথম যাচ্ছি দার্জিলিং। দার্জিলিং শহরটা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৭১০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। আমাদের গাড়ি চলতে থাকল। এক বাঁকের পর আরেক বাঁক। এভাবে চলতে চলতে আমরা রাস্তার মাঝে বিরতী নিয়ে চা নাস্তা করলাম। আর পাহাড়ের সারি সারি চা বাগান উপলব্দি করলাম। সেই সাথে সেখানকার আদিবাসীদের জীবন-জীবিকা কিভাবে বসবাস করছে যা যুগ যুগ ধরে তা উপলব্দি করলাম।


আমাদের গাড়ি প্রায় সন্ধ্যা সময় দার্জিলিং শহরে ডুকল। আমরা আমাদের ব্যাগ নিয়ে সোজা চলে গেলাম। যেখানে ধর্মীয় প্রগ্রাম আছে সেখানে। শিলিগুড়ি টাউন থেকে দার্জিলিং শহরে যেতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। পুরো সময়টা কিন্তু পাহাড় বেয়ে আসতে হয়।

দার্জিলিংয়ে গৌধুলি বেলার সময় ।
রাতের সময়
যখন গাড়ি থেকে নামলাম। ঠান্ডা কি রকম অনুভব করলাম। প্রচুর ঠান্ডা। আমরা সাত পাঁচ না ভেবে সোজা মন্দিরে ডুকে গেলাম। সেখানে কম্বল জড়ায়ে আমরা শীত থেকে বাচার চেষ্টা করছিলাম। পরে আমাদের জন্য চা আর নাস্তা চলে আসল। তবে সেই আগে গৌধুলী বেলার কিছু ছবি তুলেছিলাম। নাস্তা খেয়ে আমার রুমে বসে ছিলাম। আমরা পাঁচ জনে গল্প করছি। আর ঠান্ডার কথা বলছি। এখানকার মানুষ কিভাবে থাকে আমরা চিন্তা করতে ছিলাম।

তারপর রাত ৮ টা দিকে আমাদের রাতের খাবার পরিবেশন করা হল। অনেক স্বাদ ছিল তরকারি গুলো। কিন্তু একদম নরম্যাল খাবার। কারন, দার্জিলিং সব কিছু জিনিসের দাম বেশি। খেয়ে দেয়ে আমরা সোজা ঘুমে চলে গেলাম। তারপর ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাইরে অবস্থা একটু দেখে ছিলাম। বাহ্ বাইরে কি ঠান্ডা সেই ঠান্ডার পরেও স্মৃতি স্বরুপ কিছু ছবি তুললাম। 

আমার যেখানে ছিলাম সেখান থেকে কাঞ্চন জঙ্গ্যা পর্বত দেখা যায় স্পষ্ট ভাবে। আর সকালে আবহাওয়াটা অন্য রকম। যা বাস্তবে না দেখলে বুঝতে পারবে না। সবাই ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে হাতমুখ ধুইয়ে সকালে নাস্তা করলাম। এরপর আবার রুমে গিয়ে ধর্মীয় প্রগ্রামে অবস্থিত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি ছেড়ে নিয়ে আবার সকাল সকাল বের হলাম।

দুর থেকে কাঞ্চন জঙ্গ্যা
এরপর আমরা প্রায় সক কিছু দেখার সুযোগ হল। দার্জিলিং শহরে টয় ট্রেনটা খুবি আকর্ষনীয়। টয় ট্রেনে ভ্রমনের সুযাগ হয় নি। কিন্তু দেখার সুযোগ হয়েছে। তারপর দার্জিলিং রাস্তা ঘাট দোকনাপাত।

সকাল বেলা
আপনি দার্জিলিংয়ে আসলে মনে করবেন কোন ইউরোপ দেশে আসছেন। সব কিছুর মিল আছে ইউরোপ দেশের মত। সকাল বেলা সবাই যার কাজে সেই বের হয়। কারোর দিকে কারোর চাওয়ার সময় নেই। সবাই যার  যার কাজে ব্যাস্ত। এরপর আমরা সবাই মিলে কিছু ছবি তুললাম। আর কাঞ্চন জঙ্গ্যা দুর থেকে দেখলাম। 

ঘুরে অনুষ্ঠান যোগদান করে সোজা চলে আছি শিলিগুড়ি শহরে। সব জায়গা ঘুরে বেড়ানো সুযোগ হয় নি। কারন, আমাদের সময় খুবি কম ছিল। যা দেখার সুযোগ হয়েছে। পরবর্তীতে আরো সব কিছু ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হবে।

রাস্তা ঘাটের অবস্থা
দার্জিলিংয়ে দেখলাম মানুষ কিভাবে পরিবেশের সাথে তাল মিলেয়ে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করেছে। প্রত্যেক দিন কম করে হলেও হাজার দুয়েক পর্যটন ঘুরতে যায়। আসলে দার্জিলিং একটা সুন্দর জায়গা। আপনারা চাইলে ঘুরে আসতে পারেন তো। ভিডিও দেখতে পারেন-   traveling Darjeeeling

দার্জিলিং ঘুরে আসা নতুন অভিজ্ঞতা

কয়েক দিন যাবৎ মন মানসিকতা তেমন কোন ভাল ছিল না। আর সেই ফাকে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। এই রকম চিন্তা করতে করতে। হঠাৎ আমার ফোন বেজে উঠল। দেখি আ...