
বাংলাদেশে অনেক আদি জাতি সত্ত্বা আছে। আমরা যাকে আদিবাসী, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্টি বা উপজাতি বা পাহাড়ি বলি। যাদের অধিকাংশ বাস করে পার্বত্য চট্টগ্রামে। এর পাশাপাশি সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ আরো অনেক জায়গায়। যারা অত্যান্ত সংখ্যায় কম। যেমন- পার্বত্য চট্টগ্রামে বাস করে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, খিয়াং, খুমী, বম, ম্রো ইত্যাদি আদিবাসী। আর যারা সমতলে বাস করে তারা যেমন- গারো, খাসিয়া, মুনিপুরি, বরিশালে রাখাইন সহ নানা ধরনের আদিবাসী।
সেই সাথে তাদের সব কিছুর নির্দিষ্ট স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, ভাষা, কৃষ্টি আছে। যে গুলো দিয়ে আদিবাসীরা হাজার হাজার বছর ধরে লালন পালন করে আসছে। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে তার রুপ বদলে যায়।
প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক সপ্তাহ, প্রত্যেক মাস এবং প্রত্যেক বছর এই দেশের আদিবাসীদের উপর নেমে আছে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, ভূমি দখল, ধর্মান্তরিত, জাতি গত বৈষম্য স্বীকার সহ যত প্রকার অমানবিক কর্মকান্ড গুলো।
বরিশালে যেখানে হাজার হাজার রাখাইন পল্লী ছিল আজ সেখানে শততে নেমে এসেছে। আর পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে আদিবাসী সংখ্যা ৯৯% ছিল আর বাঙালি ছিল ১% । আজ তা নেমে ৫০% নেমে এসেছে। কয়েক বছর থাকলে সংখ্যাটা উল্টো হয়ে যাবে।
যখন কোন ধর্ষন বা অগ্নি সংযোগ ঘটনা ঘটে তার তো কোন সুবিচার করে না। স্থানীয় প্রশাসন বরং সেই জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার ব্যাবস্থা করে। তাই ঘটে যায় বড় বড় সাম্প্রদায়িক ঘটনা।
তার প্রতিকার তো হয় নি। বরং যারা শান্তির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা যেখানে আদিবাসী সম্প্রদায় আছে সেখানে শান্তিরক্ষীরা ভক্ষক হয়ে রুপ নেই।
তখন সেই আদিবাসীদের এই দেশে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দেখে না। বরং বাধ্য হয়ে দেশান্তরি হওয়ার চিন্তা করে। যেখানে গেলে আশ্রয় পাওয়ার কথা সেখানে উল্টোটা লাভ করলে অবশ্যই সেই সব সহজ সরল মনে দেশান্তরী ভাবনাটা উন্নত হওয়া স্বাভাবিক।
যেখানে প্রতিনিয়ত নিজের কোন নিরাপত্তা নেই। যেখানে প্রতি নিয়ত ধর্ষন হওয়ার ভয় থাকে। যেখানে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার নেই। যেখানে প্রতি নিয়ত জায়গা হারানোর ভয় থাকে। সেই দেশে থেকে লাভ কি?
যেখানে নাগরিক অধিকার নেই। সেখানে বেঁচে থেকে লাভ নেই। তাই আমাদের আদিবাসীরা দেশান্তরী হওয়ার চিন্তা করছে। কিন্ত দেশান্তরী হলে কি সেই সুখ লাভ করবে?
No comments:
Post a Comment