আমরা বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়কে যুগে বাস করছি। ছেলেমেয়েদের আসক্তি এখন শুধু টেলিভিশন, ভিডিও এবং সেলফোন এর প্রতি নয়, ইন্টারনেটেও ওদের প্রবল আসক্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এটা অনস্বীকার্য যে এই ধরনের মাধ্যমগুলো ব্যবহারে লাভক্ষতি দুটোই আছে। আর তা নির্ভর করছে ব্যাবহারের উপর। ওসব মাধ্যমের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে আমরা যদি অভ্যাস্ত না হই, তাহলে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই ওসব বস্তর দাসত্ব মেনে নেবে। বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে মেয়েদের হাতে এল, মানা সত্ত্বেও ওসবের প্রতি আকর্ষন ততোধিক বেড়ে যাবে। এই মাধ্যমগুলোর ব্যবহারে বাধা নেই, কিন্তু কখন কতটা সময় ধরে ওসবের ব্যাবহার হবে না তা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। যেমন উদাহরনস্বরুপ বলা যেতে পারে, ইন্টারনেটে কখন বসবে, কখন লেখাপড়া করবে, কখন নামায ও প্রার্থনা করবে।
ছেলে মেয়েদের বলে দিবেন কখন ইন্টারনেটে বসবে কখন টেলিভিশন দেখবে। আসল কথা হচ্ছে , রাত জাগা কিছু না করে। দেরীতে ঘুমোলে ছেলেমেয়েরা সকালে উঠবেনা। বকাবকি করতে হবে ওঠার জন্য। ফলে ঘুম থেকে উঠে কটুবাক্য করতে হবে, ছেলেমেয়েরা মুখে মুখে তর্ক করতে শিখবে। অধিকন্তু ফন্দিফিকির করতে হবে এবং মিথ্যা কথা বলতে কুন্ঠিত হবে না।
সময়-শৃঙ্খলা মেনে চললে স্কুলের লেখাপড়াও ভালো করতে উৎসাহ বোধ করবে। বড়ো হলে, আরও সময়নিষ্ঠ হবে, যথাযথ আচরন করবে এবং কথায় কথায় মেজাজ দেখিয়ে রুঢ় আচরনে প্রবৃত্ত হবে না।
সময় মেনে চলার ফলে অনেক পরিবারের ছেলেমেয়েরা টেলিভিশন ইন্টারনেট জনিত সমস্যা থেকে মুক্ত হয়েছে।
একটি পরিবারের কথা আমরা জানি। এ পরিবারের কর্ত্রী একজন অধ্যাপিকা ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক মহলে তার যথেষ্ট সুনাম আছে। তিনি সবার প্রিয় িএবং সকলেই তাঁকে শ্রদ্ধা করেন। তাঁর স্বামী লেখাপড়া চালিয়ে যাবার জন্য বিদেশে অবস্থান করেছেন। স্ত্রী তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘর সামলাচ্ছেন। এদের দেখাশোনার জন্য ভাইকে সঙ্গে তাদের সাথে থাকতে বললেন। ছেলেমেয়েরা বেশ মেধাবী, কিন্তু স্কুলে তাদের ফলাফল ভালো নয়। ভাইটি বুঝতে পারছেন না কেন এমনটি হচ্ছে। তাই কারন অনুসন্ধান তৎপর হলেন। তিনি কারন খুঁজে পেলেন রাত জেগে টেলিভিশন দেখার ফল এটি। বোনকে জানালেন ব্যাপারটি।
তারপর ব্যাবস্থা নেয়ার পরে তাদের স্কুলের চূড়ান্ত পরীক্ষায় তিনজনই স্ব স্ব ক্লাসে শীর্ষস্থান লাভ করলো। তাহলে দেখা যাচ্ছে লেখাপড়া, ঘুম ও শয্যাত্যাগ নির্দিষ্ট সময় মেনে করলে স্কুলের সেরা ছাত্র-ছাত্রী হওয়া এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনের দূরদর্শিতার পরিচয় দেখা যায়। অনেক ছেলেমেয়ে কোনটি ঠিক কোনটি ঠিক নয় হয়তো বুঝতে পারে কিন্তু নীতি বিগর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না। বড়ো হলে সমাজ অনেক সমস্যার জনক হয় এরা। শৈশবে এদেরকে যাচ্ছেতাই করার মনোভা ত্যাগ করে সঠিক কাজটি করার মানসিকতা অর্জনের কোন শিক্ষা দেয়া হয়নি, যেমন ঘুমানোর সময় হলে ঘুমুতে জন্য টেলিভিশন দেখা থেকে বিরত হতে হয় এ নিয়ম শিক্ষায় ওদের অভ্যাস্ত করা হয়নি।
যে সব পরিবারে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে সময়ের সদ্ব্যবহার করা হয় সে সব পরিবারের ছেলেমেয়েরা সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি ঝটপঠ সেরে ফেলতে পারে। কোন দ্বিধা কিংবা দুর্বলতা বা অন্যমনস্কতা রাধা হয়ে দাঁড়ায় না, কারন যুথোপযুক্ত শিক্ষালাভের সুযোগ ওরা পাই। এই মানব সম্পন্নতা অর্জনের ফলে ওরা খুঁটিনাটি চিন্তাভাবনা, সুষ্ঠু নীতিমালা, সঠিক জ্ঞান এবং সঠিক প্রণালীতে খুঁটিয়ে দেখে উপস্থিত সমস্যার সমাধান করতে পারে। ভবিষ্যতে ওরা সমাজে চৌকস ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিতি পাবে। যে কোন কাজ সম্পাদনে দক্ষতার পরিচয় দিতে সক্ষম হবে।
No comments:
Post a Comment